নিউজ ডেস্কঃ পাহাড় থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরিয়ে না নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানো সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে ‘রাজ্যের সুস্থিতি নষ্ট করার কেন্দ্রীয় চক্রান্ত’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
দার্জিলিং পাহাড় থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী না সরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন বলে সোমবার জানান মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিং পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার নবান্নতে সর্বদলীয় বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখেছি। পাহাড় থেকে বাহিনী না সরানোর জন্য তাঁদের অনুরোধ করেছি। আমি আশা করি ইতিবাচক সাড়া পাব।” তিনি এও বলেন, “পাহাড়ে অপ্রীতিকর যদি কিছু ঘটে, তা হলে তার জন্য কেন্দ্র দায়ী থাকবে।”
বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ‘একতরফা’ ও ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপির দলীয় অফিস থেকে কেন্দ্রীয় সরকার চলে।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র আর বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে। “হিংসাত্মক ঘটনা যাতে ঘটতেই থাকে তার জন্য তারা বাংলার সুস্থিতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।
পরে যদিও কেন্দ্র ৮০০ আধাসেনাকে পাহাড়ে রেখে দিতে রাজি হয়েছে।
মমতার অভিযোগ, “একটা আসনের জন্য বিজেপি পাহাড়ে আগুন জ্বলতে দিচ্ছে। ওই অঞ্চলে ঝামেলা পাকানোর জন্য পলাতক বিমল গুরুংকে মদত দিচ্ছে দার্জিলিং-এর বিজেপি এমপি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এস এস অহলুওয়ালিয়া।”
পাহাড়ে প্রচুর পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশকে থাকা সত্ত্বেও কেন গুরুংকে ধরা সম্ভব হচ্ছে না জানতে চাওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কারণ গুরুং কিছু প্রতিবেশী রাজ্য এবং উত্তর-পূর্বের কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কাছে থেকে সাহায্য পাচ্ছেন। দার্জিলিং-এর এমপিও সাহায্য করছেন।”
পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বদল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এ দিনের বৈঠকে জন আন্দোলন পার্টি ছাড়া পাহাড়ের সব দল যোগ দেয়। আগামী ২১ নভেম্বর দার্জিলিং পিন্টেল ভিলেজে পরবর্তী সর্বদল বৈঠক হবে।
এ দিনের সর্বদল বৈঠক সম্পর্কে দার্জিলিং-এর বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স-এর চেয়ারম্যান বিনয় তামাং সাংবাদিকদের বলেন, আজকের বৈঠকে মূলত তিন মাসের আন্দোলনে নিহতদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, আন্দোলনের ফলে অনুপস্থিত জিটিএ কর্মীদের ‘ব্রেক অব সার্ভিস’ করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা রদ করা হয়েছে। কারও ‘ব্রেক অব সার্ভিস’ হবে না।
অন্যদিকে, বিনয় তামাং বলেন, বিমল গুরুং ছাড়া জিজেএম-এর বাকি সব নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য তিনি রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন।